তারপর বহু বছর কেটে গেছে।
আমার একরোখা প্রেমকাব্যের
শেষ পৃষ্ঠাটি আর লেখা হয়নি।
ফলে প্রথম কাব্যগ্রন্থও
কখনও আলোর মুখ দেখেনি।
সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছিলাম এ কারণে—
সে জানত, কেউ একজন তাকে চায়,
তবু তার চোখে ছিল না কোনো স্বীকৃতি,
কানে আসে নি কোনো প্রত্যাখ্যানও।
সে তো পারত—
আমাকে দীর্ঘ প্রতীক্ষার শূন্যতায় ফেলে না রেখে
একটি নিষেধ–বাণী উচ্চারণ করতে।
আজ বহু বছর পর
আমরা মুখোমুখি হলাম।
চারপাশে দু–একটা ডাহুকের ডাক ছাড়া
সবকিছু তখন প্রচণ্ড নিস্তব্ধ।
আমি কাঁপা গলায় প্রশ্ন করলাম—
“সুহাসিনী, বলো তো—
বাদল দিনে, কিংবা বসন্ত ও হেমন্তের
সন্ধিক্ষণে—
কখনো কি এক মুহূর্তের জন্য
আমাকে অনুভব করেছিলে?”
সে ধীরস্বরে বলল—
“হ্যাঁ… অনুভব করেছিলাম।”
ব্যস—
আমার অসমাপ্ত কাব্যগ্রন্থের
শেষ পাতাটি যেন ফিরে পেলাম।
নিঃশব্দে সেটি প্রেসে পাঠিয়ে দিলাম।
আর কিছুই চাই না আমি।
এই একটি মাত্র শব্দ—
যেন বহু বছরের নীরবতায়
হঠাৎ ফুটে ওঠা একটি নক্ষত্র—
আমার জীবনের চরম সার্থকতা।
রফিক আতা
রচনাকাল
ছাব্বিশ, বারো, পঁচিশ ইং
শুক্রবার।
রাত,১২. ৪১ মিনিট।