অনলাইন দুনিয়া
মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন
বিশ্লেষণধর্মী। ডিসেম্বর ২৬,২০২৫
ভালো মানুষ হওয়ার জন্য যতটা পরিশ্রম করা দরকার, তার সবটাই আমরা ঢেলে দিয়েছি ‘অনলাইন দুনিয়া’ নামক এক মায়াময়, মিথ্যে জগতে!
ভুলে গেছি বাস্তব জীবনে ভালো মানুষ হওয়ার কথা।
আমাদের নৈতিকতা, মানুষের প্রতি সহানুভূতি, দয়া, সততা—সবই আজ ক্যামেরাবন্দী।
দেখতে সত্যিই ভালো লাগে। আর্টিস্টিক দৃষ্টিকোণ থেকে তো বটেই!
কিন্তু সত্যি বলতে কী, জেনুইন ব্যাপারটাকে আমরা কখনোই সত্যিকারের মূল্য দিইনি। ভালো আর জেনুইন তো এক জিনিস নয়!
মানুষ এখন আর জেনুইন হতে চায় না। সবকিছুতেই নান্দনিক ডিজাইনের প্যাকেজিং চাই। মানুষেরও প্যাকেজিং হয়ে গেছে।
একটু কাইন্ডনেস, একটু অনেস্টি, একটু গ্রেটফুলনেস মিশিয়ে দিলেই প্যাকেজিংয়ে দারুণ একটা রঙিন আভা আসে।
আমরা মুগ্ধ হয়ে যাই!
আর ভিতরে যে খালি, শূন্য—সেটা কেউ দেখে না। কারণ ক্যামেরার ফ্রেমে তো শুধু বাইরের চকচকে দিকটাই ধরা পড়ে।
অনলাইনে আমরা যতটা ভালো, বাস্তবে তার অর্ধেকও নই। যতটা দয়ালু দেখাই, তার ছিটেফোঁটাও কাছের মানুষগুলোর প্রতি দেখাই না।
আমরা সবাই একেকটা সুন্দর প্যাকেট। বাইরে লেবেলে লেখা—‘পিওর গুডনেস’। কিন্তু ভিতরে কী আছে, সেটা খুলে দেখার সাহস কারো নেই।
আর আমরাও চাই না কেউ খুলে দেখুক।
কারণ জেনুইন হওয়া কঠিন। প্যাকেজিং করা সহজ। লাইক আসে, কমেন্ট আসে, ফলোয়ার বাড়ে।
আর বাস্তব জীবনে? সেখানে তো কোনো ফিল্টার নেই। কোনো এডিট করার অপশন নেই।
সেখানে আমরা যা আছি, তাই। খোলা, কাঁচা, অপরিশোধিত।
কিন্তু আমরা সেই সত্যিটাকে আর মেনে নিতে পারি না।
তাই অনলাইন দুনিয়ায় ভালো মানুষের মুখোশ পরে থাকি। আর বাস্তবে ধীরে ধীরে খারাপ হয়ে যাই।
একদিন হয়তো বুঝব—ভালো মানুষ হওয়ার আসল জায়গা তো এই স্ক্রিন নয়, এই হৃদয়।
কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যাবে।
#অনলাইনদুনিয়া #জেনুইন #ভালোমানুষ #সোশ্যালমিডিয়া #মুখোশ #প্যাকেজিং #সত্য #নৈতিকতা #বাস্তবজীবন #মানুষহওয়া