রমজান মাস: সচেতন থাকি, ভুলগুলো এড়াই
রমজান মাস, বরকত ও পুণ্যের মাস। এই মাসে আমরা আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত এবং জান্নাতের নৈকট্য লাভের আশায় রোজা রাখি, ইবাদত-বন্দেগিতে মনোনিবেশ করি।
কিন্তু অনেক সময় আমরা কিছু ভুল করে থাকি যা আমাদের ইবাদতের কবুলিয়তকে ব্যাহত করে।
এই লেখায় আমরা রমজান মাসে আমরা যেসব সাধারণ ভুলগুলো করে থাকি সেগুলো তুলে ধরে সকলকে সচেতন করার চেষ্টা করবো।
১. রোজার পূর্বে অতিরিক্ত খাওয়া:
রমজান মাসে অনেকেই রোজার পূর্বে অতিরিক্ত খাবার খান। আমাদের চিন্তা ভাবনার পুরোটা জুড়েই থাকে ‘খাওয়া-দাওয়া’।
যার দরূন আমরা উপোস থাকার মাসকে ভোজের মাসে পরিণত করেছি। ইফতারের সময়ে আমাদের টেবিলের অবস্থা দেখার মত! পুঞ্জীভূত নানাপদী খাবার, মিষ্টান্ন এবং পানীয়ে পরিপূর্ণ। পক্ষান্তরে, আমরা রামাদানের মুখ্য উদ্দেশ্য ভুলে যাচ্ছি, আর এভাবে আমাদের লোভ আর প্রবৃত্তির অনুসরণ বাড়তে থাকে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষালাভ করার বদলে। এটাও একধরনের অপচয় এবং সীমালঙ্ঘন।
“.....তোমরা খাও এবং পান করো, এবং কোনো অবস্থাতেই অপচয় করো না, আল্লাহ্ তাআলা কখনোই অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না ।”(সূরা আ’রাফঃ৩১)
২. দিনের বেলায় ঘুমিয়ে থাকা:
রমজান মাসে অনেকেই দিনের বেলায় ঘুমিয়ে থাকেন। এটি একটি অনভিপ্রেত অভ্যাস যা ইবাদতের ক্ষতি করে।
রামাদান মাস হচ্ছে অত্যন্ত মূল্যবান সময়, এতটাই মূল্যবান যে মহান আল্লাহ্ পাক একে ‘আইয়্যামুম মাদুদাত’(একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক দিবস) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমাদের অনুধাবন করার পূর্বেই এই মাগফিরাত ও মুক্তির মাস শেষ হয়ে যাবে। আমাদেরকে চেষ্টা করা উচিত এই পবিত্র মাসের প্রতিটি মূহুর্ত আল্লাহর ইবাদাতে কাটানোর, যাতে করে আমরা এই মাসের সর্বোচ্চ সওয়াব হাসিল করতে পারি।
৩. রোজা ভাঙার সময় অতিরিক্ত খাওয়া:
রোজা ভাঙার সময় অনেকেই অতিরিক্ত খাবার খান। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং ইবাদতের ক্ষতি করে।
রোজা ভাঙার সময় হালকা খাবার খাওয়া উচিত।
৪. গীবত, পরনিন্দা এবং মিথ্যা বলা:
রমজান মাসে গীবত, পরনিন্দা এবং মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
এইসব অভ্যাস আমাদের রোজার সওয়াব নষ্ট করে।
৫. ঈদের দিন অতিরিক্ত খরচ করা:
ঈদের দিন আনন্দ-উৎসবের দিন। কিন্তু ঈদের দিন অতিরিক্ত খরচ করা উচিত নয়।
ঈদের দিন পরিমিত খরচ করে গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
পরিশেষে, রমজান মাস হলো আত্মসংশোধন ও আত্মিক উন্নয়নের মাস। এই মাসে আমাদের সচেতন থাকা উচিত এবং ভুলগুলো এড়িয়ে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের চেষ্টা করা উচিত।