আপনারা সবাই কন্টেন্টের নাম কম বেশি শুনেছেন কিন্তু What is Content ?এই সম্পর্কে আপনারা হয়তো জানেন, তবুও আর একবার পড়ার অনুরোধ করছি।আজকে আমি আপনাদের কন্টেন্ট কী ও কীভাবে একটা মানসম্মত কন্টেন্ট লিখতে হয় সে সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা দিব।
Content ইংরেজী শব্দ। এর অর্থ হলো বিষয়বস্তু। Content হলো, কোন একটি বিষয়ের উপর বিস্তারিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার মাধ্যম বা প্রক্রিয়া।অথাৎ কন্টেন্ট হচ্ছে কোন একটি বিষয় কে সহজ সরল ভাবে মার্জিত ভাষায় উপস্থাপন করা।যা পড়া মাত্রই মানুষ বিষয়টির সম্পর্কে জানতে পারে।ব্যাপক অর্থে কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু হলো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বিভিন্ন রকম তথ্যের সংকলন (সংযোগ বা একত্র করা), যা বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে পাঠক বা দর্শকের বোঝার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। বইয়ের গল্প, নাটক, সিনেমা, খবর, গান—এ সবগুলোই হচ্ছে কনটেন্ট।কন্টেন্ট হতে পারে যে কোন বিষয়ের উপর।সেটি হতে পারে ছবি, ভিডিওগ্রাফী, লিখিত কনটেন্ট, অ্যানিমেশন, অডিও পডকাস্ট, পিপিটি, ডক ফাইল, পিডিএফ ফাইল ইত্যাদি। তবে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত Content হলো লিখিত কনটেন্ট।একটা
মানসম্মত কন্টেন্ট লেখার কৌশলসমূহ নিম্নরুপ-
১।প্রথমে কী বিষয়ে আপনি কন্টেন্ট লিখতে চাচ্ছেন তা নির্বাচন করতে হবে।এটি হতে পারে ইতিহাস- ঐতিহ্য,সংস্কৃতি,দর্শনীয় স্থান,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,বৃক্ষ ও বন অথবা যেকোনো বিষয়ে।ধরুন আপনি দর্শনীয় স্থান নিয়ে কন্টেন্ট লিখতে চাচ্ছেন আর আপনি কুয়াকাটাকে বিষয় হিসেবে নির্বাচন করেছেন।কুয়াকাটা হবে আপনার কন্টেন্ট শিরোনাম বা বিষয়বস্তু।
২।কন্টেন্ট রাইটার হতে হলে প্রথমেই আপনাকে প্রচুর পরিমাণে রিসার্চ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।রিসার্চ করতে না পারলে কখনোই আপনি একটা ভালো ইনফর্মেটিভ আর্টিকেল বা কন্টেন্ট লিখতে পারবেন না। রিসার্চ করা বলতে বোঝাচ্ছি, আপনি যেই টপিকটা নিয়ে লিখতে চাচ্ছেন,সেটা সম্পর্কে আগে রিসার্চ করে ভালো করে জানুন।এক্ষেত্রে আপনি গুগলে সার্চ ও ইউটিউবে ভিডিও দেখতে পারেন,এছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে রিসার্চ করতে পারেন।তারপর ওই টপিকটার উপর একটা পূর্ণাঙ্গ ইনফর্মেশনে ভরা কন্টেন্ট লিখে ফেলুন।সঠিক তথ্য এবং উপাত্ত সংগ্রহ করে আপনি আপনার কনটেন্টের মান বৃদ্ধি করতে পারেন।
৩।১৫০/২০০ শব্দের মধ্যে কন্টেন্টটি লিখতে হবে।খেয়াল রাখব কন্টেন্ট যেন খুব বেশি ছোট বা খুব বেশি বড় না হয়।আপনি চাইলে ১টা প্যারায় লিখতে পারেন আবার ২/৩ বা তার অধিক প্যারায়ও লিখতে পারেন।
৪।যেকোনো কাজের শুরুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।কাজটা কী রকম হবে সেটা অনেকদিক থেকে নির্ভর করে কাজটা কিভাবে শুরু করা হয়েছিল সেটার উপর।কন্টেন্ট লেখার ব্যাপারেও এটা সত্যি।
যদি আপনার কন্টেন্টের প্রথম প্যারাটা ভালো না হয়, প্রথম প্যারাতেই আপনি রিডারকে হুক করাতে না পারেন, তাহলে রিডার প্রথম প্যারা পড়েই চলে যাবে। বাকি অংশটুকু পড়বেনা। তাই একজন দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে আপনার কাজ হচ্ছে প্রথম প্যারাতেই রিডারকে হুক করে ফেলা।কোনো কিছু লেখার আগে পাঠক,তার আগ্রহ ও দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে পজিটিভ ইম্প্রেসন ক্রিয়েট করার প্রতি জোর দেওয়া উচিত।
৫।কন্টেন্ট লেখার সময় সবচেয়ে বেশি যেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো পাঠকের আগ্রহ।চেষ্টা করবেন কন্টেন্টের প্রথম ও শেষের দিকে পাঠকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলে ধরার।যেন আপনার কন্টেন্ট পড়ে পাঠক আনন্দ পায় এবং অনেক কিছু শিখতে পারে।আর আপনার লেখা পড়ে পাঠক মুগ্ধ হয় এবং পুনরায় আপনার লেখা পড়তে আগ্রহী হয়।
৬।অনেক বেশি বেশি পড়ুন। যত বেশি পড়বেন, তত বেশি আপনার ভালো লেখতে পারার দক্ষতা বাড়বে।শুধু বই পড়ার কথা বলছি না, ইন্টারনেটে প্রত্যেকটা টপিকের উপর হাজার হাজার আর্টিকেল, ব্লগ পোস্ট আছে। আপনি যেই বিষয়ে ইন্টারেস্টেড, সে বিষয়ের আর্টিকেল, ব্লগ পোস্ট পড়া শুরু করুন।এতে শুধু আপনার ভোকাবুলারি বাড়বে না, আপনি কিভাবে ইন্টারেস্টিং ওয়েতে লিখতে হয় তাও শিখতে পারবেন।
৭।কনন্টেট এর ভাষায় শব্দের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন যাতে পাঠক এর বোধগম্য হয়।সহজ ও স্পষ্ট ভাষা ব্যবহার করুন।বানানের দিকে বিশেষ নজর দিবেন বানান যেন ভুল না হয়।ব্যাকারণগত ভুল পরিহার করুন।
৮।কন্টেন্ট লেখার সময় তাড়াহুড়ো করে লিখবেন না।আপনি বেশি সময় নিয়ে কন্টেন্ট লিখলে লেখা মানসম্মত হবে।
৯।কন্টেন্ট লিখতে প্রচুর ধৈর্য প্রয়োজন।ধৈর্যশীলতা আপনাকে দক্ষ কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে গড়ে তুলবে।
১০।লেখালেখির প্রতি প্যাশন থাকা একজন কন্টেন্ট রাইটারের জন্য অত্যাবশ্যক।
১১।কন্টেন্টের শেষের দিকে তথ্যসূত্র বা রেফারেন্স আপনার কন্টেন্টটিকে অনন্যমাত্রা দান করবে।
১২।প্লাগারিজম পরিহার করুন।অন্যের লেখা হুবহু কপি করবেন না।নিজের মেধা,পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাকে কাজে লাগান।নিজের সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনা কন্টেন্টে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন যা আপনার কন্টেন্টকে অন্যান্য কন্টেন্ট রাইটারদের থেকে ইউনিক করে তুলবে।
১৩।কন্টেন্ট লেখা শেষে কয়েকবার নিজে পড়ে দেখুন কোনো ভুল ভ্রান্তি হয়েছে কিনা,বানান ঠিক আছে কিনা,সঠিক তথ্য দিয়েছেন কিনা।প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে আপনার লেখা দেখিয়ে নিতে পারেন এতে ভুলের সম্ভাবনা কমে যাবে।
১৪।বিভিন্ন উৎস থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করুন।এক্ষেত্রে লক্ষ রাখবেন আপনার তথ্য যেন নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়।
১৫।কন্টেন্ট লেখা খুবই সোজা এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।লেখালেখির সাথে লেগে থাকুন।ভয়কে জয় করতে পারলে আপনি একসময় কন্টেন্ট রাইটিং এক্সপার্ট হয়ে উঠবেন।
১৬।নিজের সামর্থ্যের ওপর আস্থাশীল থাকা খুবই জরুরি।মনে রাখবেন আপনি যেমন নতুন লেখালেখি শুরু করবেন অনেকেই আপনার মতোই নতুন।কেউ তো এখনো যাত্রা শুরুই করেনি এদিক থেকে আপনি অনেকের থেকে এগিয়ে।
📝Najat Mridha