আমি তার পোস্ট এতে নতুনত্ব কিছু পেলাম না। পশ্চিমারা যেই গু খাওয়া অভিযোগ করে সেগুলোই ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে এই এই গোবর মার্কা লোক করেছে। পোস্ট এর শুরুতে সে কোরআনের মিরাক্কেল স্বীকার করেছে, তারপর সে হাদীসকে জঞ্জাল বলে আখ্যায়িত করেছে। এই হেদুকে বলতে চাই যে তাদের চটি পুরাণ জঞ্জাল হতে পারে আমাদের রাসূল সাঃ এর হাদীস না।
সে হাদীসের উপর প্রথম দিকে একটা বিসয় উল্লেখ করে তা হলো " নবীজির মৃত্যুর ২০০-২৫০ বছর পর বুখারী মুসলিম বা সিহাহ সিত্তাহ লেখা হয় হয় " আমার এখানে দুটো কথা আছে -
১. এই বুখারী মুসলিম বা সিহাহ সিত্তাহ এর আগে থেকেও হাদীস লেখা হতো, আর সেটা রাসূল সাঃ এর যুগ থেকেই। বুখারী মুসলিম এর আগেও মুসনাদে আহমদ, মুয়াত্তা মালেকের মতো বিখ্যাত হাদীসের কিতাব সংকলন হয়। এছাড়াও নানান হাদীসের বই সংকলন হয় যেগুলোকে হাদীসুল সহিফা বলি আমরা। অর্থাৎ সিহাহ সিত্তাহ এর আগে থেকেই হাদীস লেখা শুরু হয় এবং এটা রাসূল সাঃ এর সাহাবীদের মাধ্যমেই
২. বুখারী মুসলিমে যে হাদীস আছে তা ইসনাদসহ সংকলন করা হয় এবং এই হাদীসগুলো যাছাইরের জন্য বিভিন্ন উসূল নির্ধারন করা হয় + তার প্রয়োগও করা হয়। উসূলে হাদীসের এই বিষয় জানতে গেলে একজন মুহাদ্দিস এর শরণাপন্ন হতে হবে।
তারপর লেখছে " বলা হয়ে থাকে আরবদের স্মৃতি শক্তি অনেক প্রখর, কিন্তু বিজ্ঞান আর লজিক বলে যে মানুষের স্মৃতি শক্তি ডাটাবেসের মতো ফিক্সড থাকে না... "
আমার মনে হয় গোমূত্র সেবন করা ভাই মনে করেছে আমাদের খাইরুন কুরনের ইমামরা হাদীস মুখস্থ করে তার কোনো চর্চা করত না এবং তা হয় তো কাওকে বলত না, আর এরকম ভাবার কারণে সে এই পয়েন্ট নিয়ে এসেছে। তার জানা উচিত যে আমাদের সাহাবী, তাবেই, তাবে- তাবেইন তারা সেগুলো ঢ়েমন সংগ্রহ করত এবং মুখস্থ করততেমন করে সেগুলোর প্রচারও করত+ বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগও করত। তারা প্রত্যেক হাদীস অনুশীলন করত। নামায সম্পর্কে শত শত হাদীস আছে, যেমন নামাযে প্রথমে তাকবীর দিতে হবে, তারপর সানা পাঠ করতে হবে, তারপর ফাতিহা বলতে হবে... তো এগুলো যেমন হাদীসে এসেছে৷ সেসব হাদীস মোতা বেক আমাদের সাহাবী তাবেইরা আমলও করেছে। আর এটা তো আমরা সবাই জানি যে একটা জিনিস জেনে তার উপর চর্চা করলে তা কখনো ভুলার নয়.... । ঠিক একইভাবে নামাযের মতে আরও যত বিষয় আছে সেগুলোও তারা চর্চা করেছেন, তারা যেমন হাদীস মুখস্থের মাধ্যমে সংরক্ষণ করেছেন তেমনি বাবে হাদীসের শিক্ষাকে আমলের মাধ্যমেই জিন্দা রেখেছে.... । আর এখানেই যে তিনটা বিষয় একসাথে ভূমিকা রেখেছে তা হলো-
১. হাদীস সংগ্রহ করে তা শিক্ষা করা
২. তার উপর আমল করা
৩. হাদীসের প্রচার ও প্রসার করা
এই তিনটা বিষয় এক হয়ে হাদীসের শিক্ষা ও বিষয়কে এমন ভাবে ফিক্সড করেছে যে হাদীসের মধ্যে কোনো রকম গলদ হওয়ার চান্স নেই....... ।
যদি এরকম হতো যে সাহাবা বা তাবেইরা শুধু তা মুখস্ত করে নিজের মাঝেই রেখেছে, তার কোনো চর্চা করে নি এবং ছাত্রদের তা শিখাই নি, তাহলে চান্স থাকত যে তাদের স্মৃতিশক্তি বিভ্রম এর মাধ্যমে হাদীসেও গলদ এসে যেত... কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ তারা শুদু মুখস্থ করেন নি বরংতা আমল ও প্রচারের মাধ্যমেই হাদীসের শিক্ষাকে অটুট রেখেছে... ।
আর এই কারণগুলোর জন্যই আমাদের হাদীস যুগ যুগ ধরে অক্ষত ছিল বিশুদ্ধ ভাবে... ।
[ এখন একটু তার ধর্মের ব্যাপারে বলি। সে হাদীসের উপর অভিযোগ আনতে গিয়ে বলল যে " মানুষের স্মৃতিশক্তি ডাটাবেজের মতো ফিক্সড না, আমি বলি ডাটাবেজ নিজেও কোনো ফিক্সড না। আর যদি আমরা ধরে নেই যুগ যুগ দরে শুধু মুখে মুখে বলে হাদীস সংরক্ষণ করার কারণে হাদীসে গলদ ঢুকেছে, তাহলে একই গলদ তাদের বেদেও ঢুকেছে কেননা বেদও লেখার মাধ্যমে না বরং তা ঋষিদের স্মৃতি পরম্পরায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। তো আমাদের হাদীস যদি স্মৃতি পরম্পরায় সংরক্ষণ করার কারণে তাতে বিকৃত ঢুকে তাহলে একইভাবে তাদের ঐশ্বরিক ধর্মগ্রন্থ বেদের মধ্যেও বিকৃত ঢুকেছে... কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এসব হেদুরা বলে যে তাদের বেদে কোনো বিকৃত নেই তা নির্ভুল, ব্লা ব্লা..... ( পুরাই ডাবল স্ট্যান্ডাড) ]
তারপর সে লেখেছে " বুখারী ৬ লক্ষ থেকে মাত্র ৭ হাজার হাদীস লেখেছে আর বাকিগুলো সে নিজেই জাল যঈফ বা দুর্বল বলে বাদ দিয়েছে.. "
এইখানে এসে সে সবচেয়ে বড় একটা মিথ্যাচার করেছে ইমাম বুখারীর উপর৷ এই আবালকে ওর কোন বাপে বলেছে যে ইমাম বুখারী ৬ লক্ষ হাদীস থেকে ৭ হাজার সহীহ হিসাবে লিপিবদ্ধ করেছে আর বাকি গুলো জাল- দুর্বল হওয়ার কারণে তা আাদ দিয়েছে? "
এর জানা উচিত যে মানুষ যা জানে তার সকল বিষয় কখনো সংকলন করেন না, আমরা যে স্কুল- কলেজে বিজ্ঞানের যে বইগুলো পড়ি সেখানে কিন্তু সকল বিজ্ঞানের ফ্যাক্ট থিওরি লেখা থাকে না, এখন আমার প্রশ্ন হলো আমাদের বিজ্ঞান লেখকরা কি বাকি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব গুলো এই কারণে লেখেন নি কারণ সেগুলো ভুল ছিল? উত্তর হলো না, একদমই না। বিজ্ঞানের অনেক তত্ত্ব তথ্য আছে যা সত্য কিন্তু তবুও আমাদের তা পড়ানো হয় নি বা আমাদের বই এতে লেখা হয় নি কারণ হয় তো সেগুলো আমাদের সেক্টরের বা ডিপার্টমেন্ট এর ছিল না।
যেমন ধরুন আপনি যদি বায়োলজিকালি নিয়ে পড়েন তাহলে আপনার বায়োলজিকালি বই এতে কখনো কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিয়ে লেখা থাকবে না, এখন কি আপনি বলবেন যে আপনার জীব বিজ্ঞান বই যে লেখেছে সে কোয়ান্টাম ফিজিক্স ভুল বলে সেটা লেখে নি? উত্তর হলো না, একদমই না, বরং সেগুলো আপনার বায়োলজি ক্লাসের না তাই সেগুলো লেখা হয় নি।
ঠিক একই রকম ভাবে ইমাম বুখারীও তার জানা সকল হাদীস লেখেন কি কারণ তার সকল সহীহ হাদীস বুখারীতে লেখার দরকার ছিল না। তো তিনি যে ৯০% হাদীস লেখেন নি বুখারীতে, তার মানে এই না যে সেই ৯০% হাদীস যঈফ বা জাল ছিল। আমাদের মনে রাখতে হবে যে ইমাম বুখারী শুধু বুখারী শরীফ লেখে নি বরং সে আরও অন্যান্য বই লেখেছে, তার মধ্যে একটা বিখ্যাত বই হলো আল আদাবুল মুফরাদ, এটাও হাদীসের কিতাব, আর মজার বিষয় হলো যে এটাতেও অনেক সহীহ হাদীস আছে যা বুখারীতে নেই.... আর এখান থেকেই প্রমাণ হয় যে ইমাম বুখারী তার কিতাব বুখারীতে যা লেখেন নি তার বাহিরেও সহীহ হাদীস আছে যা তিনি অন্যান্য কিতাবে লেখেছে....... ।
তো ইমাম বুখারী ৯৯% হাদীস জাল যঈফ বলে তা বাদ দিয়েছেন এটা লোখার পর একই প্যারাতে সে রাজনীতি বিষয়ক আজগুবি কথা লেখে, আপনারা এসব ইমোশনাল ছাগলামি কথাবার্তার জবাব বেলাল হোসেনের " হাদীসের বিশুদ্ধ নিরূপণ : প্রকৃতি ও পদ্ধতি " বই সহ আরও অন্যান্য বই এতে পেয়ে যাবেন...... ।
এই হিন্দু ব্যক্তির পুরো পোস্ট এর কাউন্টার হিসাবে আমি যদি রেফারেন্স যুক্তিসহ পয়েন্ট টু পয়েন্ট লেখা- লেখি তাহলে বড় একটা পোস্ট হয়ে যাবে।
আপনারা যারা হাদীস এর ছাত্র আছেন তারা আমার screenshots এতে দেওয়া তার পোস্ট পড়লেই বুঝতে পারবেন যে গোমূত্র খাওয়ার ইফেক্ট কত প্রকার ও কি কি।
সে যেসব অভিযোগ করেছে তা আগেই মুসলিম আলেমরা রদ ( খন্ডন) করেছে। তার হাদীস নিয়ে যদি এতই সলশয় হয় তাহলে কেন সে ইমামদের কাছে যায় না এসব নিয়ে আলোচনা করতে? কোনো আলেমের সাথে এসব নিয়ে আসলে করলেই তো সে তার সকল সংশয় দূর করে দিবে ইনশাআল্লাহ.... ।
যাইহোক এতটুকু লেখলাম শুধু এটা বুঝানোর জন্য যে সে যে অভিযোগ নআর পয়েন্ট নিয়ে এসেছে তা খন্ডনযোগ্য....... তাই এত প্যারা নেওয়ার কিছু নেই....
#প্রিন্স_ফ্রেরাসে