ইগো শব্দটা আমরা সবাই শুনেছি।ইগো হচ্ছে একজন ব্যক্তির কাছে তার নিজের পরিচয় বা আত্মপরিচয়।। এই কি গো যখন অতিরিক্ত হতে শুরু করে তখন মানুষটি নিজেকে অনেক বড় ভাবতে শুরু করে ইগো বেশি হয়ে যাওয়া মানে
আত্মপরিচয়টা অনেকটা আত্ম অহংকার এ রূপান্তরিত হয়। এই ইগোর ফলশ্রুতিতে মানুষের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করে।। যে ব্যক্তির ইগো অতিরিক্ত বেশি সে কোন মানুষকে সম্মান করতে চায় না অথবা তার মতামত কে সম্মান দিতে জানে না।। এবং ইগোর সবথেকে ভয়াবহ দিকটি হচ্ছে একজন মানুষ তার ইগো কে সন্তুষ্ট করার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে অর্থাৎ অপরপ্রান্তে একজন মানুষের ক্ষতি পর্যন্ত সে করতে পারে।।
এখন আপনি নিজের ভিতরে থাকা ইগো কে কিভাবে শনাক্ত করবেন সেটা বলা যাক।।
আচ্ছা কখনো খেয়াল করেছেন কি যে আপনি আপনার কোন খুব কাছের মানুষ যার সাথে আপনার প্রতিদিন কথা হয় হঠাৎ করে আপনি তার সাথে দু তিন দিন কথা বললেন না কোন কারণ নেই হয়তো তাকে পরীক্ষা করার জন্যই বললেন না, কিন্তু তখন আপনার খুব একটা কষ্ট হচ্ছে না তার সাথে কথা না বলে থাকতে অথচ যখন সেই মানুষটা আপনার সাথে কথা বলছে না আপনি কথা বলতে চাওয়ার পরেও তখন কিন্তু আপনার পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি কষ্ট হয়।
এই একই ধারণার মাধ্যমে ইগো কিভাবে মানুষের ক্ষতি করে আমরা সেটাও বুঝে নেব।।
আচ্ছা ধরুন আপনার কোন একটা বন্ধুর সাথে একটা মেয়ের প্রথম থেকে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল কিন্তু আপনি আসার পরে তার গুরুত্বে ভাগ বসাতে শুরু করেন অর্থাৎ ওই মেয়েটি আপনাকেও সমান অথবা তার থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে থাকে। তখন ওই বন্ধু হয়তো আপনাকে বলবে যে আপনি যেন ওই মেয়েটির সাথে কোন ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে যান হ্যাঁ সে হয়তো আপনাকে সহযোগিতা ও করবে মেয়েটির সাথে কোন সম্পর্কে জড়াতে কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনি পরিবর্তনটা দেখতে পাবেন যখন আপনি ওই মেয়েটার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যাবেন তখন থেকে।। যখন আপনি সম্পর্কে জড়িয়ে যাবেন ঠিক তখনই আপনার বন্ধু নিজেকে গুরুত্বহীন ভাবতে শুরু করবে ওই মেয়ের কাছে এবং এর ফলেই তার আত্ম অহংকার আঘাতপ্রাপ্ত হবে।। সে তখন ধীরে ধীরে বুঝতে থাকবে যে ওই মেয়েটার প্রতি সেও অনেকটা দুর্বল। আর সব থেকে বড় কথা তখন দুর্বল হোক আর না হোক সে ওই মেয়েটার সাথে আরও বেশি করে মেশার চেষ্টা করবে সেটা যে করেই হোক হতে পারে আপনাকে তার জীবন থেকে অর্থাৎ ওই মেয়ের জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও সে করতে পারে এবং নিজে আপনার জায়গা দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করবে।। সে হয়তো আপনাকে ওই মেয়ে সম্পর্কে কিছু নেগেটিভ কথা বলতে পারে যাতে আপনি ওই মেয়েকে ছেড়ে দেন অথবা ওই মেয়েকেও আপনার ব্যাপারে অনেক কিছুই বলতে পারে যাতে মেয়েটাই আর আপনার সাথে যোগাযোগ না রাখে । হ্যাঁ আমরা সকলেই জানি যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক কতটা মধুর হয় কিন্তু যখনই ঘটনাটা ইগো অর্থাৎ আত্মঅহমিকায় আঘাত করে তখন মানুষ আর বন্ধুত্বের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে না তখন সে যে কোন মূল্যে তার আত্মঅহংকারকে সন্তুষ্ট করতে চায়।। তবে হ্যাঁ সব ক্ষেত্রে এমনটা নাও হতে পারে তাই সব সময় অপর প্রান্তের মানুষটিকে সে হোক আপনার বন্ধু কিংবা প্রেমিকা তাকে যাচাই করে দেখুন সে আসলে কি চাচ্ছ। সবশেষে আমি আপনাদের এটা বলতে চাই যে আপনি আপনার ইগো কে নিয়ন্ত্রণ করুন এমনটা যেন না হয় যে ইগো আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।। চেষ্টা করুন একজন মানুষের সামান্য খারাপ ব্যবহারের তুলনায় আপনাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের গুরুত্বটাকে প্রাধান্য দিতে। মানুষকে ভালোবাসুন তাদের মতামতকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন ।।