“কখনও কখনও, শব্দের চেয়েও শক্তিশালী হয় একটুখানি স্পর্শ।”
এই একবাক্যের গভীরতা অনুধাবন করতে হলে হৃদয়ের অন্তস্তলে প্রবেশ করতে হয়। কেননা, মানবমনের সবচেয়ে সূক্ষ্ম আবেগসমূহ অনেক সময় শব্দের সীমাবদ্ধতায় প্রকাশ পায় না; সেখানে একটুখানি নিঃশব্দ স্পর্শ হয়ে ওঠে ব্যথার প্রশমন, ভালোবাসার উচ্চারণ।
শব্দের সীমা আছে—তাকে গঠন করতে হয়, সাজাতে হয়, প্রয়োজনে আবরণ দিতে হয়। কিন্তু স্পর্শ? সে তো নির্মল, উদ্ভিন্ন—মনের ঠিক সেই স্থানে গিয়ে ধাক্কা দেয়, যেখানে শব্দ ঢুকতে সাহস করে না।
একটি অব্যক্ত অশ্রু, একটি কাঁপা হাতে ধরা হাত, একটুখানি কাঁধে হাত রাখার স্পর্শ—এসব হয়ে ওঠে তীর্থস্নানের মতো পরিশুদ্ধ। সে-স্পর্শ বলে, “আমি রয়েছি পাশে, তোমার দুঃখে আমি একাত্ম।” সে বলে না, তবু বুঝিয়ে দেয়।
বিশেষ করে মাতৃত্ব, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব কিংবা শোক—এই চিরায়ত মানবিক অভিজ্ঞতাগুলোর গভীরে যে অনুরণন ধ্বনিত হয়, তা কখনো কখনো শুধু একটুখানি স্পর্শেই প্রকাশ পায়। সেই স্পর্শে নেই শব্দের জাঁকজমক, নেই রঙিন বর্ণনা—আছে নিঃশব্দে কথা বলা, নিঃশর্তে পাশে থাকা।
তাই তো বলা হয়,
“স্পর্শ এক নীরব ভাষা, যা হৃদয়ের গভীরতম স্তরেও তরঙ্গ তোলে—অন্তঃস্থ আত্মায় অনুরণন সৃষ্টি করে।”