Enolej Idea-তে লেখা প্রকাশের নিয়ম জানতে পূর্ণ নির্দেশনা দেখুন...
ই-নলেজ আইডিয়া হলো এমন একটি চিন্তানির্ভর প্ল্যাটফর্ম, যেখানে মানুষ শুধু তথ্য নয়, চিন্তা শেয়ার করে। এখানে জ্ঞানীরা একত্র হন, নতুনরা পথ খুঁজে পান, এবং সবাই মিলে তৈরি হয় একটি জ্ঞানভিত্তিক উম্মাহ। এটি জ্ঞানচর্চাকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ বানানোর একটি প্রচেষ্টা, যেখানে লেখা, ভাবা ও শেখা—সবই হয় মুক্তভাবে।আজই যোগ দিন!নিবন্ধন করতে এখানে ক্লিক করুন...।
সাজেস্টেড: পড়াশোনা, লেখালেখি, বিজ্ঞান

"স্যাপিওসেক্সুয়ালরা বুদ্ধিমত্তা দেখে প্রেমে পড়েন"

0 পছন্দ 0 অপছন্দ
16 বার প্রদর্শিত
করেছেন (390 পয়েন্ট)   20 মে "গবেষণা" বিভাগে লেখা প্রকাশিত
পোষ্ট আইডি কার্ড↓ - লেখনীর স্বত্ব ও গুণের পরিচয়!

Are You Sapio?


প্রেম মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। মানুষ যখন কারও প্রেমে পড়ে তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই সে চেহারা, বাহ্যিক সৌন্দর্য ইত্যাদি দেখে প্রেমে পড়ে। কিন্তু এমনকিছু মানুষ আছেন যারা চেহারা কিংবা শারীরিক সৌন্দর্য নয়, শুধু বুদ্ধিমত্তা দেখেই প্রেমে পড়েন তারা। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘স্যাপিওসেক্সুয়াল’।


স্যাপিওসেক্সুয়াল শব্দটি ল্যাটিন মূল শব্দ 'স্যাপিয়েন' থেকে এসেছে যার অর্থ জ্ঞানী এবং 'সেক্সুয়ালিস' যার অর্থ যৌনতা।স্যাপিওসেক্সুয়ালকে বাংলায় ধীকামীতাও বলা হয়। স্যাপিওসেক্সুয়াল এখনও একটি মোটামুটি নতুন শব্দ, কারণ মেরিয়াম-ওয়েবস্টার শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন ২০০৪ সালে। গবেষণা অনুসারে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১% থেকে ৮% লোক সেপিওসেক্সুয়াল হতে পারে।


Sapiosexual শব্দটির অর্থ হলো, বুদ্ধিমত্তার প্রতি যৌনরূপ আকর্ষণ বা উদ্দিপনা।এই স্যাপিওসেক্সুয়ালিটি হলো, একজন ব্যাক্তি, তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যাক্তির প্রতি খুবই আকর্ষণ বা উদ্দিপনা বোধ করে যৌনরূপ আকর্ষণ বা উদ্দিপনার মত। বিখ্যাত কলিন্স ডিকশনারির মতে ‘One who finds intelligence the most sexually attractive feature are sapio-sextual’ তাছাড়া বেশিরভাগ সমকামী, বাইসেক্সুয়াল, হেটেরোসেক্সুয়াল, অ্যাসেক্সুয়াল মানুষ নিজেকে স্যাপিওসেক্সুয়াল বলে দাবী করেন।


আসলে সময়ের সঙ্গে প্রেমের ধরন বদলেছে। এসেছে নানা পরত। মানুষ এখন কেবল সংসার পাতা বা সন্তান উৎপাদনের জন্য প্রেম, বিয়ে করে না। অনেকের কাছেই শারীরিক সৌন্দর্য ছাপিয়ে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে বুদ্ধিমত্তা। যাঁরা একটা মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রেমে পড়েন, তাঁদেরই ডাকা হয় স্যাপিওসেক্সুয়াল। যে ব্যক্তি যত বেশি বুদ্ধিবৃত্তির অধিকারী, সে ব্যক্তির প্রতি তাদের মুগ্ধতা জন্মানোর প্রবণতাও তত বেশি। আর সেই বুদ্ধিমত্তা হতে পারে কৃত্রিম। আর এ কারণেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর সংখ্যাটাও বাড়ছে হু হু করে। এঁদেরকে সংক্ষেপে ডাকা হয় স্যাপিও। স্যাপিওসেক্সুয়াল লোকেরা অন্য ব্যক্তির বাহ্যিক কাজের চেয়ে একজন ব্যক্তির মনের অভ্যন্তরীণ কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং ফোকাস করে।


একজন মানুষ নিজে অনেক বুদ্ধিবৃত্তির অধিকারী হলেই যে সে স্যাপিওসেক্সুয়াল হবে, এমনটি নয়। ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, সম্পর্ক সৃষ্টির ক্ষেত্রে মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তারা সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয় সঙ্গীর মহানুভবতাকে এবং তার সাথে নিজের বোঝাপড়াকে। এছাড়া সম্পর্কের অন্য দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো: সঙ্গীর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং সঙ্গীর সাথে সহজে মিশতে পারা।


জেনে নেওয়া যাক স্যাপিওদের বৈশিষ্ট্য—


১. স্যাপিওসেক্সুয়ালরা প্রেমে পড়ার জন্য বুদ্ধিমত্তার ওপর গুরুত্ব দেন বেশি। অপর পক্ষের গভীর চিন্তাশক্তি, কৌতূহলী মনোভাব, প্রচলিত ব্যবস্থাকে প্রশ্ন করার মানসিকতা ও ব্যক্তিত্বই তাঁদের টানে বেশি। এদের কাছে আকর্ষণ শরীরে নয়, বরং মেধায় লুকিয়ে থাকে।


২. স্যাপিওদের ধরন দুই প্রকার। এক, এঁরা বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে আকর্ষণ বোধ করেন। দুই, এঁদের কাছে যৌনতা মুখ্য নয়। বরং ওই মানুষটার সঙ্গে বিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ব, রাজনীতি, দর্শন নিয়ে আলোচনা করতেই ভালোবাসেন তাঁরা। এটাকে বলা যায় প্লেটোনিক প্রেম। যেখানে থাকে না যৌনাকাঙ্ক্ষা কিংবা যৌন আকর্যণ থাকলেও সেটি মুখ্য নয়।


৩. স্যাপিওরা হুট করে প্রেমে পড়েন না। যেহেতু শারীরিক আকর্ষণ এখানে গৌণ। তাই ‘প্রথম দর্শনেই প্রেম’ তাঁদের জন্য মুখ্য নয়। তাই প্রেমে পড়তে এঁদের সময় লাগে। ফলে শুরুতে স্যাপিওদের হয় বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্ব সময়ের সঙ্গে প্রেমে গড়ায়।


৪. স্যাপিওরা মনে করেন, তাঁদের প্রেমটাই সেরা। কেননা সময়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ক্লিশে হয়ে আসে, সৌন্দর্য হারিয়ে যায়, টিকে থাকে কেবল বুদ্ধিমত্তা। তাই বুদ্ধিমত্তাটাই শেষ কথা। আর এটাই প্রেমে পড়ার উপযুক্ত কারণ হওয়া উচিত।


৫. স্যাপিওরা সাধারণত অন্তর্মুখী স্বভাবের হন। আর যাঁর প্রেমে পড়েন, সে সাধারণত তাঁর শিক্ষক, মেন্টর, বস, উচ্চপদস্থ কেউ বা পুরোনো বন্ধু হন। হতে পারেন সহকর্মীও। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মনের কথাটা বলে ওঠা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই স্যাপিওদের প্রেম বিবাহবহির্ভূতও হয়। একমুখী (ওয়ান সাইডেডও) হয়। সময়ের সঙ্গে একমুখী প্রেম হারিয়েও যায়।


৬. সঠিক সময়ে, উপযুক্ত পরিবেশে স্যাপিওদের প্রেম হলে সেটা সাধারণত টেকসই হয়।


৭.স্যাপিওদের কাউকে পছন্দ মানে সত্যিই পছন্দ। এর একটা কারণ স্যাপিওদের সহজে কাউকে পছন্দ হয় না, অনেকটা সময় লাগে। উলটোদিকের মানুষটার সঙ্গে মেধা ও বৌদ্ধিকভাবে সংযোগ স্থাপনের পরই আসে তাকে ভালোলাগার প্রশ্ন। ফলে যখন কাউকে তাদের ভালো লাগে, তখন সেটা বেশ সিরিয়াসই হয়।


৮. বোকামি বা অযৌক্তিক কথা বলা মানুষ স্যাপিওদের পছন্দ না। পাশাপাশি যারা অল্পতেই রাগ দেখান, চিৎকার-চেচামেচি করেন, পরিস্থিতি শান্তভাবে সামলাতে পারেন না তারা স্যাপিওদের অপছন্দের কাতারে পড়ে।


৯. স্যাপিওরা নিজের সঙ্গীকে নিয়ে যত বেশি জানতে পারেন তাদের প্রতি আকর্ষণ তত বেশি বৃদ্ধি পায়। সঙ্গীর সাথে গঠনমূলক বিষয়ে আলোচনা তাদেরকে যৌন মিলনের মতো আনন্দ দেয়। 


১০. স্যাপিওসেক্সুয়ালরা নিজের সঙ্গীর সাথে বিতর্ক করে বেশ আনন্দ পান। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আলোচনা তাদের পছন্দ না। তারা নিজের সঙ্গীর সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন। 


১১. ধীকামী এইসব মানুষ অনেকটা বাঁচাল স্বভাবের হন। যেকোন বিষয়ে বিষদ আলোচনা, প্রশ্ন করতে পছন্দ করেন তারা। কম কথা বলা মানুষ তাদের অপছন্দ। পাশাপাশি স্যাপিওরা জ্ঞান আরোহনের প্রতি আগ্রহী।


১২. যেকোনো ব্যাকরণগত ভুল, বানানের ভুল স্যাপিওরা অপছন্দ করেন এবং তাদের মাঝে খুঁতখুঁতে স্বভাব দেখা যায়। স্যাপিওরা যথেষ্ট রসিক হয় কিন্তু অযৌক্তিক রসিকতা তাদের বিরক্ত করে তুলে।


১৩. স্যাপিওসেক্সুয়ালদের অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা পছন্দ না, তাদের বন্ধু ও প্রেমের সংখ্যা কম। তাই বেশিরভাগ মানুষই তাদেরকে অহঙ্কারী ভাবেন।


১৪.এরূপ ব্যাক্তি দুর্দান্ত বন্ধু বানিয়ে থাকেন। তারা ক্রমবিকাশের বা উন্নতির দ্বারা অনুপ্রাণিত হন এবং অন্যকে অনেক কিছু শিখিয়ে থাকেন।


১৫.এরূপ ব্যাক্তি একে অপরের প্রশংসা করে থাকেন। এবং যদি আপনাকে আপনার শারীরিক বৈশিষ্ট্য এর চেয়েও বেশি কিছু বলে থাকে তাহলে এটি নিশ্চিত যে আপনার বুদ্ধির জন্যই এমনটা ঘটেছে।


১৬.এরূপ ব্যাক্তি বিনয়ী হয়ে থাকেন। যারা পরদুঃখকাতর, সহানুভূতিশীল এবং একে অন্যকে বুঝে থাকেন, তারা এরূপ ব্যাক্তিকে পছন্দ করেন এবং বুদ্ধিমত্তার একটি বৈশিষ্ট্য বহন করে এর মাধ্যমে।


১৭.এমন ব্যাক্তি প্রায় ছোট ছোট বা অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা এড়িয়ে চলেন। বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বা রসবোধপূর্ণ কথা বলা ব্যাক্তির প্রতি আকর্ষণ, উদ্দিপনা বা ভালো লাগা কাজ করে থাকে। তার সাথে অতিরিক্ত সময় কাটাতে ভালো বোধ হয়।


[তথ্যসূত্র: গুগল]

image

আমি নাজাত মৃধা, ই-নলেজ এর একজন যাচাইকৃত লেখক। আমি এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত আছি প্রায় 4 সপ্তাহ ধরে, এবং এ পর্যন্ত 19 টি লেখা ও 0 টি প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছি। আমার অর্জিত মোট পয়েন্ট 390। ই-নলেজ আমার চিন্তা, জ্ঞান ও কণ্ঠকে সবার মাঝে পৌঁছে দিতে সহায়তা করেছে।
★[উৎস]: উক্ত লেখাটি মূল লেখক কর্তৃক প্রকাশিত। নিজস্ব আইডিয়া

ID: 1000
লিংক কপি হয়েছে

এই ব্লগটির প্রতিক্রিয়া দিতে দয়া করে প্রবেশ কিংবা নিবন্ধন করুন ।

সংশ্লিষ্ট ব্লগগুচ্ছ


image
প্রেম মানেই তো একটু সরলতা, একটু বোকামি, আর ‘মদন’—সে তো প্রেমের চিহ্ন... নামটি ছিল মদন। নামটা শুনলেই যেন মনে পড়ে এক কুয়াশামাখা শহরের কথা, কোনো পুরাতন প্রেমকাহিনির রঙচঙে পাতা— যেখানে [...] বিস্তারিত পড়ুন...
109 বার প্রদর্শিত 3 টি প্রতিক্রিয়া
0 পছন্দ 0 অপছন্দ

নিউরন হলো স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যকরী মৌলিক একক। নিউরনের বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। তারমধ্যে একটি বিশেষ ধরনের নিউরন হচ্ছে মিরর নিউরন।  (মিরর নিউরন হল এমন একটি নিউরন যা একটি প্রাণীর কাজ করার [...] বিস্তারিত পড়ুন...
6 বার প্রদর্শিত 0 টি প্রতিক্রিয়া
0 পছন্দ 0 অপছন্দ

image
নাস্তিকদের একটি সাধারণ প্রশ্ন আছে, সেটা হচ্ছে  যাকে চোখে দেখা যায় না তাকে কেন আমরা বি[...] বিস্তারিত পড়ুন...
63 বার প্রদর্শিত 0 টি প্রতিক্রিয়া
0 পছন্দ 0 অপছন্দ

image
হীরা তৈরি? মাত্র ১৫০ মিনিটে! বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম হীরা তৈরির নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা প্রকৃতির চেয়ে অনেক দ্রুত! আগে ধারণা করা হত হীরার তৈরি হতে কোটি কোটি বছর লাগে। কিন্তু এখন বিজ্[...] বিস্তারিত পড়ুন...
133 বার প্রদর্শিত 0 টি প্রতিক্রিয়া
0 পছন্দ 0 অপছন্দ
ই-নলেজ আইডিয়ায় আপনি নিজের লেখক প্রোফাইল তৈরি করে যেকোনো বিষয়ের উপর লিখতে পারেন। প্রতিটি লেখা থাকবে ইউনিক আইডি সহ, ইন্টারনেটে সার্চ করেও সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে। পাবেন ব্যাজ, পয়েন্ট ও স্বীকৃতি—যা লেখক হিসেবে গড়ে তুলবে আপনার পরিচয়। এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিভাবানরা একত্রিত হন, আর আপনি হয়ে উঠতে পারেন তাঁদের একজন। নিজের লেখাকে রাখুন নিজের নামে, নিজের প্রোফাইলে—চিরস্থায়ীভাবে।
  1. নাফিসা হাসনীন

    20 পয়েন্ট

    0 টি প্রতিক্রিয়া

    0 মন্তব্য

    1 আইডিয়া ব্লগ

  2. সিরাজুর রহমান

    20 পয়েন্ট

    0 টি প্রতিক্রিয়া

    0 মন্তব্য

    0 টি আইডিয়া ব্লগ

  3. তুশিতা রিহা

    10 পয়েন্ট

    0 টি প্রতিক্রিয়া

    0 মন্তব্য

    0 টি আইডিয়া ব্লগ

  4. আশিক চৌধুরী

    2 পয়েন্ট

    0 টি প্রতিক্রিয়া

    0 মন্তব্য

    0 টি আইডিয়া ব্লগ

...